লন্ডনে আলোচনায় নবীগঞ্জের সাকিব

নবীগঞ্জে আলোচনার ঝড় তুলেছে যুক্তরাজ্য প্রবাসী কিশোর সাকিব চৌধুরী। ১০ বছর বয়সেই দুটি বইয়ের লেখক। শহরের পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সাকিব পারিবারিকভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছে। যুক্তরাজ্য হালসিটির বাসিন্দা এই কিশোরকে নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। সে দেশের খ্যাতিমান লেখকরা তার শৈল্পিক শব্দ চয়ন দেখে অভিভূত। সাকিব চৌধুরীর চাচা এমদাদুল চৌধুরী বাংলাদেশ সচিবালয়ে কর্মরত একজন যুগ্ম সচিব। সিলেটের কনিষ্ঠ কাউন্সিলর জায়েদ চৌধুরীর মামাতো ভাই কিশোর সাকিবকে নিয়ে পরিবারে আনন্দের শেষ নেই। সাকিবের পারিবারিক সূত্র জানায়, তার লিখিত দুটি বই ‘টর্মাক’ ও “দ্য কিডনাপার’স লায়ার” হালসিটিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাকে নিয়ে গর্বিত বাঙালি কমিউনিটি। তার আইকন আইরিস লেখক মি. ড্যারেন শ্যারন বলেন, আমি সাধারণত নবীন লেখকদের লেখার ব্যাপারে অনেক উদ্বিগ্ন থাকি। অল্প বয়স্ক লেখকদের লেখার ব্যাপারে আরো বেশি। কারণ ভালো লেখক কিংবা লেখা উপহার দিতে হলে কমপক্ষে আট-দশ বছরের কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনের প্রয়োজন। হালসিটির নবীন লেখক সাকিব চৌধুরী আমার লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে অল্প বয়সে দুটি বই লিখেছে। এ ক্ষেত্রে তাকে সৌভাগ্যবানই বলতে হবে। কারণ মাত্র ১০ বছর বয়সে তার ঝুড়িতে দুটি বই লেখার সৌভাগ্য জমা হয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক থউসবী প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র সাকিব চৌধুরী লিখেছে এই উপন্যাস দুটি। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে তার লেখা দুটি বই প্রকাশিত হয়। সাকিবের প্রত্যাশা তার লেখা বইগুলো আইকন লেখক ড্যারেন শ্যানের লেখার মতোই কিশোরদের হৃদয়ে স্থান করে নিবে। নবীন লেখক জানিয়েছে, বই পড়ার আগ্রহ থেকেই লেখালেখির দিকে হাত বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, বই পড়তে ভালোবাসি, বইয়ের লেখকরা সত্যিই অসাধারণ। আমি তাদের লেখা অনুসরণ করি এবং আমিও তাদের মতো একজন হতে চাই। প্রথম বই লেখার সময় আমার বড় ভাই আমাকে খুব বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। প্রথম বই লেখা শেষে ২য় বই লেখার সিদ্ধান্ত নিই। কিছু লোক বইয়ের কিছু ঘটনা প্রবাহ পড়েছেন এবং বাকি অংশ জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। প্রত্যেক বইয়ে ৬০-৭০টি পৃষ্ঠা রয়েছে এবং তা লিখতে আমার ২ মাস করে সময় লেগেছে। লেখকের প্রথম বইয়ের নাম “দ্য কিডনাপার’স লায়ার”। এটি একদল বাচ্ছাদের কাহিনী। যারা তাদের হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে খুঁজছে। ২য় বইয়ের নাম ‘টর্মাক’ একটি খারাপ আচরণ ও নির্দেশনা সম্পর্কিত। সাকিবের বাবা ইকবাল আহমেদ চৌধুরী ও মা মুমিনা চৌধুরী গর্বিত তার এই অর্জনে। মুমিনা চৌধুরী বলেন, আমার পুত্র যা লিখেছে তা অব্যশই সফলতার মুখ দেখবে। সে বই পড়া ও লেখার জন্য প্রচণ্ড আগ্রহী। সে যখন কিছু লিখে তখন শুধুই লিখে যায়। মাত্র দুটি বই লিখার মাধ্যমে সে লেখক সমাজে  প্রবেশ করেছে। কিশোর লেখক সাকিব জানায়, এই মুহূর্তে তার নতুন বই লেখার পরিকল্পনা নেই। বলে, আমি এখন মাত্র ক্লাস সিক্সে পড়ছি। আমি হাইস্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেখানে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়বো। তবে ভবিষ্যতে আরো ভালো লিখবো এবং ভালো করবো ইনশাআল্লাহ?। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সাকিব চতুর্র্থ। বড় ভাই সাফায়েত সামির চৌধুরী হাইমার’স কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। সায়হাম চৌধুরী হাইমার’স স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। বড় বোন সাবিয়া চৌধুরী হাইমার’স স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট ভাই সাইম মঞ্জুর চৌধুরী হাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। ছোট বোন সামিয়া চৌধুরী যার বয়স ৩ বছর। বই পড়ার প্রতি সাকিবের অধিক আগ্রহ। ভিডিও গেমস ও ছবি আঁকায় যথেষ্ট দক্ষতা রয়েছে। বেরি লুজার এর বুক সিরিজ তার প্রিয় এবং “দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস” তার প্রিয় মুভি। উল্লেখ্য, লেখক সাকিব চৌধুরী নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইকবাল আহমেদ চৌধুরীর পুত্র। নবীগঞ্জের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফখরুল ইসলাম চৌধুরী’র ভাতিজা ও ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জামশেদ চৌধুরী’র মামাতো ভাই। তার ভবিষ্যৎ সফলতায় সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

Comments

Popular posts from this blog

বড়হাটের জঙ্গি আস্তানায় ৩ লাশ

চীন-ভারত সম্পর্ক ‘মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত’ হওয়ার হুঁশিয়ারি

এখনই রাজনীতিতে নামছেন না চেলসি ক্লিনটন