ব্রেক্সিট: ইউরোপীয় নেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেন বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ শুরু করেছে। এ সিদ্ধান্ত বৃটেনের জন্য সার্বভৌমত্ব ফিরে পাওয়া। অন্যদিকে অন্যদের কাছে এ পদক্ষেপ তিক্ততায় ভরা। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে লিবসব চুক্তির ৫০ অনুচ্ছেদ সক্রিয় করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে নানা রকম মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। বৃটেন এ ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলেও ‘আমরা একে অন্যের প্রয়োজনে লাগবো’ এমন মন্তব্য করেছেন তাদের অনেকে। প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদে, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল, ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড টাস্ক, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল প্রমুখ। ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদে বলেছেন, বৃটিশদের কাছে বেদনাদায়ক হবে ব্রেক্সিট। ইউরোপ সামনে এগিয়ে যাওয়ার গতি পাবে। নিঃসন্দেহে সেই গতি হবে ভিন্ন। অ্যাঙ্গেলা মারকেল বলেছেন, জার্মান ও তার অংশীদাররা অবশ্যই এমন দিন প্রত্যাশা করে নি। তা সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনায় সুষ্ঠু ও গঠনমুলক পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, প্রথমেই আমাদেরকে পরিষ্কার হতে হবে যে, কিভাবে আমরা আমাদের আন্তঃসম্পর্ক ছিন্ন করবো। তারপরই আসে এই প্রশ্ন। ডনাল্ড ট্রাস্ক বলেছেন, ব্রাসেলস বা লন্ডন কারো পক্ষে ব্রেক্সিট শুরুর দিনটি সুখকর এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সর্বোপরি প্রায় সব ইউরোপিয়ান, প্রায় অর্ধেক বৃটিশ ভোটার পর্যন্ত আশা করে আমরা সবাই একত্রিত থাকবো। আলাদা হবো না। সিগমার গাব্রিয়েল বলেন, ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে একটি বাক্য। তাহলো ‘প্রাইভেট ডিভোস’। কিন্তু এক্ষেত্রে যে সুরটি বাজে তাহলো আমরা বন্ধু থাকবো। বৃটেন আমাদের প্রতিবেশী থাকবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও বৃটেনের কাছে একই রকম। আমরা একে অন্যের। ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ ক্লাউডি জাঙ্কার বলেছেন, ব্রেক্সিট শুরুর দিনটি বেদনার। কারণ, এ দিনটিতে বৃটিশরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে জানিয়েছে। তারা এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যার জন্য একদিন অনুশোচনা করতে হবে তাদের। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী এন্ডা কেনি বলেছেন, ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের প্রচারণায় মিথ্য তথ্য প্রচার করা হয়েছে। সে বিষয়টি অতীত হয়েছে। সরকার এখন অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করেছে। অনেক বছর ধরে বৃটেনের সঙ্গে আমাদের ভাল সম্পর্ক। আমরা ২৭ সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন হলেও তাদের সঙ্গে সমঝোতার একই টেবিলে বসবো। ডাচ ফ্রিডম পার্টির এমপি গির্ট উইল্ডার্স বলেন, এটা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বৃটেনকে অভিনন্দন তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ফিরে পাওয়ায়। কয়েক বছরের মধ্যে নেদারল্যান্ডসও একই পথ অনুসরণ করবে। পর্তুগীজের অর্থমন্ত্রী মারিও সেন্টেনো বলেছেন, এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপ এমন এক পথে যাত্রা করবে যে পথ সবার অজানা। এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুরি রাতাস বলেছেন, সমঝোতা প্রক্রিয়া হবে অত্যন্ত কঠিন। আমরা আশা করি আবেগ পিছনে ফেলে আলোচনা হবে।

Comments

Popular posts from this blog

বড়হাটের জঙ্গি আস্তানায় ৩ লাশ

চীন-ভারত সম্পর্ক ‘মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত’ হওয়ার হুঁশিয়ারি

এখনই রাজনীতিতে নামছেন না চেলসি ক্লিনটন