ভারতের সন্ন্যাসী মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলল অ্যামনেস্টি



ক্ষমতায় আসার একদিনের মধ্যেই ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের সন্ন্যাসী মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়া। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে যোগী আদিত্যনাথ যা যা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন সবগুলি প্রকাশ্যে ফিরিয়ে নিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে তারা। মুসলিমদের বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে যোগীর বিরুদ্ধে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর আকার প্যাটেলের দাবি, রাজ্যের সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যকারীদের মধ্যে যোগী সবার উপরে রয়েছেন। অ্যামনেস্টির আশঙ্কা, দেশের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে নিজের এই চিন্তাধারা ও মনোভাবকে তিনি বাস্তবায়িত করতে পারেন। নির্বাচনের আগেই হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার কথা বলেছিলেন যোগী। ২০১৫সালে বারাণসীতে যোগী বলেছিলেন কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে ঢোকার মুখেই জ্ঞানবাপী মসজিদ বাধা সৃষ্টি করে। তাই দেশের সব মসজিদের সামনে গৌরী, গণেশ ও নন্দীর মূর্তি বসানোর পণ করেছিলেন। এখানেই থেমে থাকেনি যোগীর সম্প্রদায়িক উস্কানি। লাভ জিহাদ নিয়ে তাঁর বক্তব্য ছিল একজন হিন্দু মহিলাকে মুসলিম বিয়ে করলে, হাজার জন মুসলিম মহিলাকে ধর্মান্তরিত করা হবে। অ্যামনেস্টির দাবি, যাগীর সম্প্রদায়িক মনোভাব যেন সরকারি কাজে প্রভাব না ফেলে।  রাজ্যের প্রধান হিসেবে তাঁকে নিরপেক্ষ সিদ্ধা নিতে হবে। তাই অবিলম্বে সেই সব বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে যোগীকে। ভারতের জনবহুল উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতারা মনোনীত করেছেন  হিন্দু সন্ন্যাসী যোগী আদিত্যনাথকে। রবিবারই নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিযেছেন গোরক্ষপুরের গোরক্ষ মঠের অধ্যক্ষ ৪৪ বছরের যোগী আদিত্যনাথ। গেরুয়া বসনধারী আদিনাথ বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সুপরিচিতি। এবারের নির্বাচনী প্রচারেও তিনি বেশ কয়েকবার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন সংখ্যালঘুদের নিয়ে। পাকিস্তান নিয়েও তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন অনেকবার। তাঁর মুখেই শোনা গেছে, যারা সূর্য নমস্কার করে না তাদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত কিংবা সমুদ্রে ডুবিয়ে মারা উচিত। আর তা না হলে বাকি জীবনটা তাদের অন্ধকার ঘরে বন্দি করে রাখা উচিত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে হিন্দু ভোটকে সংহত করার জন্যই এক কট্টরপন্থী হিন্দু নেতাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বাছাই করা হয়েছে। বিজেপি নেতাদের দাবি, এ বার উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, মেরুকরণের তাস খেলেই জাত-পাতের অঙ্ককে অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া গিয়েছে। হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে একজোট করা গিয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সেটিকেই আরও কাজে লাগাতে চাইছে দল। এর আগে মধ্যপ্রদেশে সন্ন্যাসিনী উমাভারতীকে মুখ্যমন্ত্রী করে সেই কাজটিই করা হয়েছিল।

Comments

Popular posts from this blog

বড়হাটের জঙ্গি আস্তানায় ৩ লাশ

এখনই রাজনীতিতে নামছেন না চেলসি ক্লিনটন

‘ধানের শীষের এজেন্ট খুঁজে বের করেন’